নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্যে দিয়ে শুরু হচ্ছে তিনদিন ব্যাপী বরিশাল জেলা ইজতেমার। এরই মধ্যেই শেষ হয়েছে ইজতেমার সকল প্রস্তুতি। বুধবার থেকেই নগরীর নবগ্রাম রোডে সর্দরপাড়া সংলগ্ন ইজতেমা মাঠে আসতে শুরু করে মুসল্লিরা। আজ রাতের মধ্যে পুরো মাঠ মুসল্লিতে পরিপূর্ন হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন আয়োজকরা।
এদিকে ইজতেমাকে ঘিরে ব্যপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করছেন বরিশাল মহানগর পুলিশ। বিশেষ করে জঙ্গি কিংবা নাশকতা প্রতিরোধে ইজমেতা মাঠের আশপাশে ছাত্রবাসা, আবাসিক হোটেল কিংবা মেস বাড়িতে বিশেষ নজরদাড়ি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ওইসব স্থাপনা গুলোতে নিয়মিত তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) জাহাঙ্গীর মল্লিক। তাছাড়া মুসল্লিদের সুবিধার্তে ইজতেমা মাঠের আশপাশে কোন প্রকার দোকান পার্ট স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ।
তাবলীগ জামায়াতের সুরা সদস্য মাওলানা আব্দুল মান্নান জানান, নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২৫ জানুয়ারী থেকে সদর উপজেলা পরিষদের পেছনে নগরীর নবগ্রাম রোড এলাকার প্রায় ১৪ একর জমিতে ইজতেমার বরিশাল জেলা পর্ব শুরু হবে। বৃহস্পতিবার ফজর নামাজের বাদে তাবলীগ জামায়াতের ভোলা জেলার আমীর মাওলানা তৈয়বুর রহমান এর আম বয়ানের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে ইস্তিমার আনুষ্ঠানিকতা।
তিনি প্রায় দুই ঘন্টা বয়ান করবেন। এর পর সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত তালিম অনুষ্ঠিত হবে। একই সময়ে বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষের নিয়ে পৃথক পৃথক কামরায় বয়ান হবে। বাদ জোহর পুনরায় আসর পর্যন্ত এবং আসর বাদ মাগরিব পর্যন্ত বয়ান অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া এশার নামাজের পূর্বে মোজাকারা অনুষ্ঠিত হবে। এর পর দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ২৬ জানুয়ারী বাদ ফজর পুনরায় বয়ান শুরু হবে। এদিন ইজতেমা মাঠেই অনুষ্ঠিত হবে জুমা’র নাজাম। তবে গতকাল বুধবার ইজতেমা মাঠেই আসর নামাজ আদায় করেন আগত মুসল্লিরা।
সুরা সদস্য মাওলানা আব্দুল মান্নান খবর বরিশালকে বলেন, ইজতেমায় কে কে বয়ান করবেন এবং কোন মুরব্বি জুমার নামাজের ইমামতি করবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। রাজধানীর কাকরাই মসজিদ থেকে তাবলিগ জামায়াতের জ্যেষ্ঠ মুরব্বিরা আসার পরে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
অপর সুরা সদস্য তাবলীগ জামায়াতের মুরব্বি শাহজাহান বলেন, ইতিমধ্যেই ইজতেমা মাঠে মুসল্লিদের আগমন শুরু হয়েছে। গতকালই অনেক মুসল্লি এসে ইজতেমার প্যান্ডেলে সামিয়ানা টানিয়ে তাদের জায়গা নির্ধারন করেছে। বুধবার সন্ধ্যার মধ্যেই ইজতেমার মাঠ সুলল্লিতে পরিপূর্ন হবে বলে আশাব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, ইজতেমাকে ঘিরে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। পথে পথে মুসল্লিদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি পুরো ইজতেমার মাঠ নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে রাখা হবে। ইজমেতায় মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য ক্রাইম, ডিবি, সিটিএসবি ও ট্রাফিক বিভাগের মোট ৩শত কর্মকর্তা ও সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি ২৪ ঘন্টায় দু’টি শিফটে তারা দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া টহল ব্যবস্থা আরো বৃদ্ধি করা হবে।
তিনি বলেন, ধমীও অনুষ্ঠানকে ঘিরে সন্ত্রাসী কিংবা জঙ্গিরা নাশকতার পরিকল্পনা করে থাকে। আবাসিক হোটেল, ছাত্রাবাস কিংবা ছাত্রদের মেস বাড়িতে তারা অবস্থান নিয়ে নাশকতার পরিকল্পনা করে। এজন্য জঙ্গি তৎপরতা রোধে ইজতেমার আশপাশে প্রত্যেকটি ছাত্রবাস, মেস বাড়ি এবং আবাসিক হোটেল গুলোতে নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রয়োজনে তল্লাশীও করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ইজতেমা শেষ হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর হতে ৩দিন ব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার বরিশাল জেলা পর্ব নবগ্রাম রোডে অনুষ্ঠিত হয়। ওই ইজতেমায় ২৫ হাজারের মত মুসল্লী থাকতে পেরেছে এবং জায়গা সংকটের কারনে দেড় লাখ মুসল্লী এক সঙ্গে জুম্মা নামাজ আদায় করতে করষ্ট হয়েছে। তাই গতবারের বিষয়টি মাথায় রেখেই এবার স্থান পরিবর্তনের পাশাপাশি প্রায় ১৪ একরের বেশি জমির উপর জেলা ইজতেমার আয়োজন শেষ হয়েছে। এখানে ৩৬ হাজার মুসল্লীর এক সঙ্গে রাত্রীযাপনের জন্য বিশাল সেড নির্মান করা হয়েছে। জুম্মার নামাজে এক সঙ্গে আড়াই লাখের বেশি মুসল্লী নামাজ আদায় করতে পারবেন।
মুসল্লীদের ওজুখানা হিসেবে সদর উপজেলা পরিষদ পুকুর সহ চারটি পুকুরের চার-পাশ দিয়ে ঘাটলা নির্মান করে দেয়া হয়েছে। পানি পান করার জন্য মাঠ জুড়ে প্রতিটি দুই হাজার লিটার করে মোট ১৫টি ড্রাম স্থাপন করা হচ্ছে। থাকছে ৫শত টি পানির ট্যাপ এবং ৬শত অস্থায়ী পায়খানা। প্রয়োজনে এর সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে। ইজতেমা এলাকা জুড়ে আলোর ব্যবস্থায় থাকবে আড়াই হাজারের বেশি লাইট। বিদ্যুৎ বিভাগের সহযোগিতায় করা হচ্ছে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাও। মঙ্গলবার বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply